সাংবাদিক বন্ধুগণ,
শুভেচ্ছা গ্রহণ করবেন।
আজ ১৭ নভেম্বর ২০২৫ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে আমরা মিলিত হয়েছি এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হতে। মহান স্বাধীনতা সংগ্রামসহ বিভিন্ন গণ-আন্দোলনের অন্যতম প্রতিষ্ঠান জগন্নাথ কলেজ। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হবার ২ দশক পর প্রথমবারের মতো একটি ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। গত বছরের ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানে দেড় সহস্রাধিক মানুষ শহীদ হয়েছেন, প্রায় পঁচিশ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। সংবাদ সম্মেলন থেকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানসহ সকল শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ছিল, একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের। যা গণতান্ত্রিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়া সম্ভব নয়। এর অংশ হিসেবেই জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়টি ক্রিয়াশীল সামাজিক-সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে জকসু’র মর্যাদা রক্ষা এবং শিক্ষার্থীদের অধিকার নিশ্চিত করতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি। আমাদের প্যানেলের নাম নির্ধারণ করেছি ‘মওলানা ভাসানী ব্রিগেড’। মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী এ অঞ্চলে এক আপোষহীন লড়াইয়ের প্রতীক। তিনি অবিভক্ত ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে লড়েছেন। ১৯৪৭ এর দেশভাগের পর পাকিস্তানের শোষণ নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়েছেন, জনগণকে সংগঠিত করেছেন। তিনি ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের প্রধান নেতা। ২৪ বছরের অন্যায়- অত্যাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ধারাবাহিকতায় আমরা একটি সশস্ত্র সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হয়েছি। পেয়েছি স্বাধীন বাংলাদেশ। এদেশের মানুষের সাম্রাজ্যবাদবিরোধী, অসাম্প্রদায়িক এবং শোষন-নিপীড়ন বিরোধী চেতনার প্রতীক মাওলানা ভাসানী। আজ তাঁর ৪৯ তম মৃত্যুবার্ষিকী। তাঁর লড়াইয়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আমরা প্যানেলের নাম নির্ধারণ করেছি।
জকসুতে ২১ টি নির্বাচনী পদের জন্য ‘মওলানা ভাসানী ব্রিগেড’- এর ২১ জন সদস্য লড়বেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন গণতান্ত্রিক অধিকারের দাবিতে এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক আন্দোলনে এই সদস্যরা পরীক্ষিত মুখ হিসেবে ভূমিকা রেখেছেন।
সাংবাদিক বন্ধুগণ,
আমাদের প্রাণের বিশ্ববিদ্যালয়টি বর্তমানে নানামুখী সংকটে জরাজীর্ণ। এই ক্যাম্পাসের প্রায় সতের হাজার শিক্ষার্থী একাডেমিক কার্যক্রমের পাশাপাশি টিউশন বা পার্টটাইম চাকরি করে পুরান ঢাকার অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে টিকে আছেন। এতে পড়াশোনার বিঘ্ন ঘটছে এবং মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি অবনতি হচ্ছে। ক্যাফেটেরিয়ায় খাবারের মান খারাপ এবং পর্যাপ্ত আয়োজনের অভাবে শিক্ষার্থীরা শারীরিকভাবেও ভুগছেন। নেই কোন নিরাপত্তা– যার সর্বশেষ উদাহরণ ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থী জুবায়েদ এর হত্যাকাণ্ড। আমরা এই সকল সংকটের অবসান চাই। আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি প্রকৃত উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখতে চাই। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে আমরা আমাদের এই প্যানেল ঘোষণা করছি।